গাজীপুর মহানগর ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের দেড় শতাধিক নেতাকে কারণ দশানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এতে নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

এ নিয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে দ্বিধাবিভক্তির সৃষ্টি হয়েছে। দুই পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। নোটিশ পাওয়া নেতাদের মধ্যে ২৫ জন গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটিতে বিভিন্ন পদে রয়েছেন।

জাহাঙ্গীর আলমকে গত বছরের ১৯ নভেম্বর গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত এবং দল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়। বহিষ্কারের পরও যে সকল নেতারা তার সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন এমন দেড় শতাধিক বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের শনাক্ত করে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। ১ জুন গাজীপুর মহানগর আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মো. আতাউল্যাহ মণ্ডল স্বাক্ষরিত ওই নোটিশে সাত দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।

মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জানান, বিতর্কিত মন্তব্য করার অভিযোগে জাহাঙ্গীর আলমকে গত বছরের ১৯ নভেম্বর গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত এবং দল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়। এরপর ওই বছরের ৫ ডিসেম্বর মহানগর আ.লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় জাহাঙ্গীর আলম বহিষ্কার হওয়ার পরও যারা তার সঙ্গে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ এবং সখ্যতা রেখেছেন তাদের চিহ্নিত করতে ১১ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ওই তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয় মহানগর আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ওসমান আলীকে। তদন্ত কমিটির সুপারিশেই এই কারণ দর্শনোর নোটিশ দেওয়া হয়।

নোটিশে বলা হয়েছে, ‘গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম কর্তৃক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি কটূক্তি ও দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ কর্তৃক তাকে শোকজ ও পরবর্তীতে দলের প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়।

কিছু নেতা কর্মী দলীয় প্রাতিষ্ঠানিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে প্রকাশ্যে ও গোপনে তার সাথে বিভিন্ন সভা-সমাবেশে দলীয় পদ-পদবী ব্যবহার করে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের গত ৫ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখে কার্যকরী কমিটির সভায় ১১ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

উক্ত তদন্ত কমিটির রিপোর্টে যাদের বিষয়ে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে তাদেরকেই শোকজ নোটিশ দেওয়া হয়েছে। নোটিশ প্রাপ্তদের বিরুদ্ধে কেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রের ৪৭ ধারার বিধান মতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা নোটিশ প্রাপ্তির ৭ দিনের মধ্যে মহানগর কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আতাউল্যাহ মন্ডলের নিকট লিখিতভাবে জবাব দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়।

ব্যর্থতায় তাদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের আদর্শ, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এবং গঠনতন্ত্রের স্বার্থের পরিপন্থী কার্যকলাপের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রউফ নয়ন বলেন, তারা আমাকে নোটিশ দেওয়ার কে? তাই তাদের নোটিশ গ্রহণ করিনি।

মহানগর আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহ সভাপতি মো. আলীম উদ্দিন বলেন, কার্যকরী কমিটির কোন মিটিং বা সিদ্ধান্ত ছাড়াই গণহারে নেতাকর্মীদের নোটিশ দেওয়া হয়েছে, যা উচিত হয়নি। একটি চক্র অযথা নোটিশ দিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার পায়তারা করছে।

গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আতাউল্যাহ মন্ডল বলেন, আমি শুধু নোটিশে স্বাক্ষর করেছি এর চেয়ে বেশি কিছু জানিনা।